Thursday, April 17, 2025

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক, শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ | Bashundhara Group

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৭০টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ১৯ কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ২৬৬ টাকা এবং ১০ হাজার ৫৩৮ মার্কিন ডলার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। এ ছাড়া তাদের নামে ২২টি কোম্পানিতে থাকা ১ হাজার ৪৫৮ কোটি ৭৫ লক্ষ ৭ হাজার ৫২০ টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেয়া হয়েছে।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক, শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ | Bashundhara Group


বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।


এসব ব্যাংক হিসাব ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যাদের নামে রয়েছে তারা হলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, তার ছেলে সায়েম সোবহান আনভীর, সাদাত সোবহান, সাফিয়াত সোবহান সানভীর, সাফওয়ান সোবহান এবং দুই পুত্রবধূ সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান ও ইয়াশা সোবহান।


তাদের বিরুদ্ধে দুদক মানি লন্ডারিং, রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি দখল, ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে শেয়ার ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আবেদন করে। এসব অভিযোগের অনুসন্ধানও করছে সংস্থাটি।


দুদকের আবেদন থেকে জানা যায়, অভিযুক্তদের ৭০টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ১৯ কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ২৬৬ টাকা এবং ১০ হাজার ৫৩৮ মার্কিন ডলার অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও, আদালত ২২ টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে থাকা ৭৫ কোটি ৮৬ লাখ ৯০ হাজার ৩০২টি শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন যার মূল্য ১ হাজার ৪৫৮ কোটি ৭৫ লাখ ৭ হাজার ৫২০ টাকা।


এ ছাড়া বসুন্ধরার চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তার পরিবারের সদস্যরা এই ৭০টি ব্যাংক হিসাবে বিভিন্ন সময়ে ২ হাজার ৭৫ কোটি ৪০ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫৭ টাকা এবং ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৩৪ ইউএস ডলার জমা করে পরবর্তীতে উত্তোলন করেছেন। তাদের ব্যাংক হিসাবে বর্তমানে স্থিতি রয়েছে ১৯ কোটি ৮১ লক্ষ ৭৪ হাজার ২৬৬ টাকা এবং ১০ হাজার ৫৩৮ ইউএস ডলার। বর্তমানে জমা এসব অর্থ অবরুদ্ধের আওতায় আনা হয়েছে।


এদিকে দুদকের অনুসন্ধানকালে তাদের নামে ও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে স্লোভাকিয়া ও সাইপ্রাসে নাগরিকত্ব গ্রহণে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেও দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের আইন না মেনে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে বিদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ, স্লোভাকিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেডিস, সুইজারল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য সিঙ্গাপুরে একাধিক কোম্পানিতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের হাবিব ব্যাংক লি. এ অর্থ জমা, সাইপ্রাস এর ইউরো ব্যাংকে বিপুল অর্থ লেনদেন করার এবং সাইপ্রাসে বাড়ি কেনার তথ্য পাওয়া যায়। এসব সম্পত্তি বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি ছাড়া কেনা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে বিদেশি পাসপোর্ট ও নাগরিকত্ব গ্রহণে তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন।


আবেদনে আরও বলেছে, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিদেশে পুঁজি নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। তারা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মূলধন স্থানান্তরের পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। এমনকি তারা বিদেশে যে সম্পত্তি অর্জন করেছেন সেগুলোর তথ্য/রেকর্ডপত্র, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর কাছে সংশ্লিষ্ট আয়কর বিবরণীতে প্রকাশ না করে তথ্য গোপন করেছেন। অর্থাৎ অভিযোগসংশ্লিষ্টরা অবৈধ উপায়ে সরকারি অনুমতি ছাড়াই বিদেশে অর্থ নিয়ে গিয়েছেন। তারা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করতে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে ‘লেয়ারিংয়ের’ আশ্রয়ে সেসব দেশে সম্পদ কিনেছেন।

Previous Post
Next Post

post written by:

0 Comments:

Note: Only a member of this blog may post a comment.